বঙ্গবন্ধুর স্মরণে মুনিরীয়া যুব তবলীগের দোয়া মাহফিল ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
সালাউদ্দিন শাহিন, বাঘাইছড়ি (রাঙামাটি) :
স্বাধীন বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একে অন্যের পরিপূরক; বঙ্গবন্ধু এদেশের নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের অন্তরে স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর হাতে প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন সহ বিভিন্ন দ্বীনি প্রতিষ্ঠান এর মাধ্যমে এখনও এদেশে ইসলামের দাওয়াত প্রচারিত হচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের সকল শহীদদের স্মরণে অরাজনৈতিক তরিক্বত ভিত্তিক আধ্যাত্মিক সংগঠন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ ১৪৩ নং মারিশ্যা (বাঘাইছড়ি) শাখার উদ্যোগে আয়োজিত “ঈছালে ছাওয়াব মাহফিল ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি” অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জনাব মুহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম।
বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ( ভারপ্রাপ্ত ) ও ফজলে আহমদী পাঠক ফোরামের উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ আলী হোসেন এর সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন বাঘাইছড়ি পৌরসভা কৃষকলীগের সভাপতি মুহাম্মদ ওসমান গনি। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন বাঘাইছড়ি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব মুহাম্মদ আব্দুস সবুর। সভাপতির বক্তব্যে বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি (ভা.) ও ফজলে আহমদী পাঠক ফোরামের উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ আলী হোসেন বলেন “কাগতিয়া দরবারের আধ্যাত্মিক আমল এর মাধ্যমে যুবসমাজ নৈতিক অবক্ষয় হতে মুক্ত থেকে দক্ষ-দেশপ্রেমিক মানবশক্তিতে পরিণত হচ্ছে; যা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ বিনির্মানে সুন্দর সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।” প্রধান আলোচকের বক্তব্যে সংগঠনের সদ্য বিদায়ী সভাপতি ও বাঘাইছড়ি পৌরসভা কৃষকলীগের সভাপতি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের বিভিন্ন কার্যক্রম-উদ্যোগ-আধ্যাত্মিকতার চর্চা সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত হয়ে “তরিক্বত কনফারেন্স ২০২১”এবং “এশায়াত সম্মেলন ২০২১” উপলক্ষে পৃথক পৃথক বাণী পাঠিয়ে দরবারের সফলতা কামনা করেন। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মডেল টাউন জামে মসজিদের খতিব ও সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ আমিনুল হক মুনিরী ছাহেব বলেন, শরীয়ত ও তরিক্বত একে অপরের পরিপূরক; তাই শরীয়তকে বাদ দিয়ে তরিক্বতের পূর্ণাঙ্গতা হয় না। তাই কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের তরিক্বতে ফরজ-ওয়াজিব কার্যাদি যথাযথভাবে পালনের পাশাপাশি সুন্নাহ-নফল এবাদতঃ নিয়মিত তাহাজ্জুদ, জিকিরে জলী, মোরাকাবা, দৈনিক ১১১১ বার দরুদ শরীফ আদায়, সালাতুল এশরাক, সালাতুল তাওবা, সালাতুল হাজ্বত, সালাতুল শোকর, কোরআন তেলওয়াত, তাহলিল, আয়াতে শেফা, খতমে খাজেগান ইত্যাদি সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে প্রতিনিয়ত আদায় করা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মুহাম্মদ লুৎফর রহমান রাজীব এর উপস্থাপনায় “ঈছালে ছাওয়াব মাহফিল ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি”তে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মডেল টাউন জামে মসজিদের সম্মানিত খতিব ও সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ আমিনুল হক মুনিরী ছাহেব, মাদ্রাসা পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা পর্ষদ ও মাদ্রাসা পাড়া সমাজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ শাহআলম কোম্পানি, বটতলী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, মাদ্রাসা পাড়া জামে মসজিদের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মাদ সোনা মিয়া সওদাগর, উপজেলা সদর ব্যাবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল মাবুদ, মাদ্রাসা পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, এফ ব্লক মাদ্রাসার পরিচালক আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ মাহমুদুর রহমান, বাঘাইহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাওলানা মুহাম্মদ বশির উদ্দিন আনসারী, বাঘাইছড়ি পৌরসভায় কর্মরত মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান, মডেল টাউন সমাজ পরিচালনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আতিকুর রহমান, মুহাম্মদ মাহমুদুর রহমান মাষ্টার, মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম রিপন মাষ্টার, সাংবাদিক মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, সাংবাদিক মুহাম্মদ ইউনুস সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি ও স্হানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
উল্লেখ্য জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঈছালে ছাওয়াব ও দোয়া মাহফিল সংগঠনের উদ্যোগে সৌদি আরবস্হ পবিত্র মক্কা শরীফ-মদিনা শরীফ, কাতার, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া সহ বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যে আয়োজন করা হয়েছে। গত ০৬ আগষ্ট টুঙ্গিপাড়াস্হ বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে খতমে কোরআন এর মাধ্যমে ১৫ দিনের কর্মসূচি গৃহীত হয়; যা আগামী ২২ আগষ্ট টুঙ্গিপাড়াতে আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে। মিলাদ-কিয়াম শেষে দেশ জাতির উন্নতি-অগ্রগতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সহ ১৫ আগষ্টের সকল শহীদদের রুহের মাগফিরাত ও জান্নাতুল ফেরদাউস কামনায় এবং কাগতিয়া তরিক্বতের রাহবার আওলাদে রাসূল হযরত শায়খ ছৈয়্যদ মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেব সহ উপস্হিত সকলের হায়াতে খিজরী ও সুস্হতা কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ আমিনুল হক মুনিরী।