পাহাড়ের মানুষের নিরাপত্তা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে

২১৫

পার্বত্য চট্টগ্রামের অস্থিরতা যেন কাটছেই না। বিরাজমান সমস্যা সমাধানে সব উদ্যোগ যেন ভেস্তে যাচ্ছে। ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক পার্বত্য চুক্তির পর পাহাড়ে শান্তির আশা করা হলেও তাতেও গুড়ে বালি। নতুন নতুন সমস্যা আর ইস্যুতে আরো জটিল হচ্ছে পার্বত্য রাজনীতি। চুক্তি পরবর্তিতে পাহাড়ি সংগঠন ভেঙ্গে যেমন গ্রুপ বেড়েছে তেমন বেড়েছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে পাহাড়ে কোন অংশে কমেনি ভাতৃঘাতি সংঘাত, খুন, অপহরণ, হামলা বা চাঁদাবাজি। গেল বছর করোনা পরিস্থিতি শুরু হবার পর থেকে এ পর্যন্ত গণমাধ্যমে নিয়মিত স্থান পেয়েছে পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড তথা খুন, অপহরণ ও চাঁদাবাজির ঘটনা। এতে পরিষ্কার হয়ে উঠে পাহাড়ি সংগঠনগুলোর কার্যক্রম অকেটাই জনবিচ্ছিন্ন। করোনায় মানবিক সংকটের সময়েও এসব সংগঠনের নামে অপকর্ম থেমে ছিলো না। ফলে পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে আরো বেশি ভাবিয়ে তুলেছে সচেতন মহলকে।

চুক্তির পর এখন পাহাড়ের বড় ইস্যু ভুমি সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে সরকার ভূমি কমিশন গঠন করলেও তাও অনেকটা অকার্যকর। এ আইনের সংশোধনীতে পাহাড়ের অর্ধেক জনগোষ্টি বাঙ্গালীদের মধ্যে অসন্তোষ বেড়েছে। অপরদিকে চুক্তি বাস্তাবায়ন প্রশ্নে সন্তুষ্ট নয় পাহাড়িদের বড় একটি অংশ। এ নিয়ে সরকারপক্ষের সাথে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দল জেএসএস এর সাথে। যা পাহাড়ে আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য প্রনয়ন করা বিশেষ কিছু আইনকে বৈষম্যমূলক বলে আখ্যায়িত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এসব আইন দুই জনগোষ্টির তথা পাহাড়ি ও বাঙ্গালীদের মাঝে দুরত্ব তৈরী করছে। এ ছাড়া এ মুহুর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সাধারণ পার্বত্যবাসীর নিরাপত্তা। অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার একাধিক গ্রুপের সন্ত্রাসী চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট পাহাড়ি-বাঙ্গালী উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। কিন্তু এসব কর্মকান্ডের বিপরীতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর যে সকল উদ্যোগ গ্রহণ করছে তা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

দিন যত যাচ্ছে ততই অনিরাপদ হয়ে উঠছে পার্বত্য জনপদ। একই কারণে পাহাড়ে সরকারের নিয়মিত উন্নয়ন কর্মকান্ডও ব্যহত হচ্ছে। পিছিয়ে পড়ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। এ অবস্থায় প্রতিটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে কার্যকরী উদ্যোগ না নিলে আরো জটিল হতে পারে পাহাড়ের পরিস্থিতি। স্বাধীন রাষ্ট্রের অখন্ড অংশ হিসেবে এ অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের নিরাপত্তা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে।

#  মোহাম্মদ সোলায়মান

০৮.০৮.২১ খ্রী:

Facebook Comments Box
You might also like